ম্যাচের শুরু থেকেই সার্বিয়ার অনবদ্য রক্ষণ। বারবার আটকে যাচ্ছেন নেইমাররা। ক্যাসেমিরোর দূরপাল্লার শট হোক কিংবা রাফিনহার চেষ্টা—হাফ টাইম অবধি সবই ব্যর্থ। গোলের মরিয়া চেষ্টায় নেইমাররা। বিরতির পরও চলছে একের পর এক আক্রমণ। অবশেষে এক ঘণ্টার মাথায় খুললো গোলের খাতা। গোল করেন রিচার্লিসন। ৭২ মিনিটে আবারও ব্রাজিলিয়ান ম্যাজিক। আবারও রিচার্লিসন। সার্বিয়ান ডিবক্সে ভিনিসিয়ুসের বাড়ানো বল দুর্দান্ত স্কিলে রিসিভ করে বাইসাইকেল কিকে চোখ ধাঁধানো গোলটি বহুদিন মনে থাকবে ফুটবলপ্রেমীদের।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটা শুরু হওয়া ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ চাড়ে সেলেসাওরা। ২-০ গোলের জয়টা ঠিক স্পষ্ট বুঝাতে পারছে না কী পরিমাণ দাপুটে খেলা খেলেছে সেলেসাওরা! বলা যায়, পুরো ৯০ মিনিট জুড়েই সার্বিয়ার রক্ষণকে আক্রমণের পর আক্রমণে দিশেহারা করে রাখে ব্রাজিল। চোখ ধাঁধানো পাস থেকে শুরু দুরন্ত গতি সবই ছিল ব্রাজিলের খেলায়।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে নিজেদের প্রান্ত থেকে গুছিয়ে আক্রমণ করে ব্রাজিল। ডান প্রান্ত থেকে বল নিয়ে সার্বিয়ার ডি বক্সে ঢুকে যান রাফিনহা। সেখান থেকে বাড়ানো বল সার্বিয়ার ডিফেন্ডারদের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। ম্যাচের দশম মিনিটে ডি বক্সে বল পান নেইমার। কিন্তু গোলমুখে শট করতে পারেননি তিনি।
ম্যাচের ১২ মিনিটে বাম প্রান্ত ধরে সার্বিয়ার ডি বক্সে ঢুকে যায় ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। সেখান থেকে কর্নার পায় ব্রাজিল। তবে কর্নার থেকে গোল পেতে ব্যর্থ হয় ব্রাজিল। ম্যাচের ২০ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে সার্বিয়ার গোলমুখে জোরালো শট করেন নেইমার। তবে তা সার্বিয়ার ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। ম্যাচের ২৫ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে যায় সার্বিয়া। ডান দিক থেকে ভেসে আসা বল সহজেই গ্লাভস বন্দি করেম অ্যালিসন বেকার।
৩৫ মিনিটে অনবদ্য একটা গোলের মুভ। বক্সের মধ্যে বল পেয়েছিলেন রাফিনহা। শুধু গোলকিপারকে পরাস্ত করতে হতো। যদিও তার শটে জোর ছিল না। সহজেই বল ধরে নিলেন সার্বিয়া গোলরক্ষক।
ম্যাচের ৪০ মিনিটে বাম দিক থেকে আক্রমণ সাজায় ব্রাজিল। ভিনিসিয়াস ডি বক্সে ঢুকলেও তা গোলমুখে শত নিতে ব্যর্থ হন। গোলশূন্য ড্র নিয়েই বিরতিতে যায় উভয় দল।
বিরতির পরই গোলপোস্টের সামনে সার্বিয়া গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন রাফিনহা। শটও নিয়েছেন। তবে সেটি গিয়ে লাগে গোলরক্ষকের পায়ে।
এরপরও দুরন্ত ফুটবল খেলছির ব্রাজিল কিন্তু সার্বিয়ার রক্ষণ এবং ভাগ্যের কাছে বারবার আটকে যাচ্ছিল সাড়াশি আক্রমণ।
অবশেষে ৬১ মিনিটে গেলের দেখা পায় ব্রাজিল। বল নিয়ে সার্বিয়ার ডি-বক্সে ঢুকে যান নেইমার। পাস বাড়ান ভিনিসিয়ুসের দিকে। জোর শট নিয়েছিলেন তিনি। প্রতিহত করেন সার্বিয়ান গোলরক্ষক। ফিরতি শটে বল জলে পাঠান আনমার্কড থাকা রিচার্লিসন।
ম্যাচের ৭২ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ম্যাজিক। দুর্দান্ত এক গোল করে রিচার্লিসন। সার্বিয়ান ডি-বক্সে ভিনিসিয়ুসের বাড়ানো বল দুর্দান্ত স্কিলে রিসিভ করে বাইসাইকেল কিকে চোখ ধাঁধানো গোল করেন রিচার্লিসন।
নেইমারের (২০১৪) পর ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ অভিষেকেই জোড়া গোল করা প্রথম ফুটবলার তিনি। ৮০ মিনিটে অস্বস্তি অনুভব করা নেইমারকে তুলে নেন তিতে।
এর পরের মিনিটে ব্যবধান ৩-০ প্রায় করেই ফেলেছিলেন ক্যাসেমিরো। কিন্তু তার বাঁকানো শটটি পোস্টে লেগে ফিরে আসে। বাকিটা সময় ম্যাচে ফেরা তো দূরের কথা নিজেদের দুর্গ সামলাতেই মহাব্যস্ত থাকতে হয় সার্বিয়াকে।
পাঠকের মতামত